• ঢাকা
  • বুধবার:২০২৪:এপ্রিল || ০৬:৪৬:৩৩
প্রকাশের সময় :
মে ১৩, ২০২২,
৯:৫৫ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট :
মে ১৩, ২০২২,
৯:৫৫ অপরাহ্ন

২৫০ বার দেখা হয়েছে ।

সয়াবিনের সংকট কাটেনি উদ্ধার অভিযান অব্যাহত

সয়াবিনের সংকট কাটেনি উদ্ধার অভিযান অব্যাহত

সয়াবিন তেলের বাজার এখনো স্বাভাবিক হয়নি। পাইকারী বাজারে সরবরাহ বাড়লেও সংকট কাটেনি খুচরা বাজারে। লিটারপ্রতি নির্ধারণ করা দামে খুচরা বাজারে এ তেল পেতে এখনো ঘর্মাক্ত হতে হচ্ছে সাধারণ ক্রেতাদের। এদিকে মজুদ করা তেল উদ্ধারে সারাদেশেই অভিযান পরিচালনা করছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এর পাশাপাশি বাজার তদারকী করছে স্থানীয় প্রশাসন ও র্যাব।

ভোজ্যতেল বিক্রিতে অনিয়মের অভিযোগে চট্টগ্রামের চৌমুহনী কর্ণফুলী মার্কেটে অভিযান চালিয়ে একটি দোকানকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। পরে দোকানে মজুত রাখা দুই হাজার লিটার তেল ন্যায্যমূল্যে সাধারণ মানুষের কাছে বিক্রি করা হয়। গতকাল শুক্রবার দুপুরে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ফয়েজ উল্যাহ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘চৌমুহনী কর্ণফুলী মার্কেটের মজুমদার স্টোরে অভিযান চালিয়ে দুই হাজার লিটার সয়াবিন তেল পাওয়া যায়। এগুলো ঈদের আগে কিনে রাখা ছিল। মজুত করা এসব তেল দোকানটি বেশি দামে বিক্রি করছিল। আগে কিনে রাখা তেল সরকার নির্ধারিত নতুন দামে বিক্রি করায় মজুমদার স্টোরকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। একইসঙ্গে দোকানটি সিলগালা করে দেয়া হয়।’

ফয়েজ উল্যাহ বলেন, ‘জব্দ হওয়া পাঁচ লিটারের এসব তেলের বোতল আগের দামে ৭৬০ টাকায় সাধারণ মানুষের মধ্যে বিক্রি করে দেয়া হয়েছে। এছাড়া বাড়তি দামে তেল বিক্রি করায় আরও একটি প্রতিষ্ঠানকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।’ এ ধরনের অভিযান সামনেও অব্যাহত থাকবে বলে জানায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ায় সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে সয়াবিন তেল বিক্রি করার অপরাধে তিন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ২২ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। অধিদপ্তরটির পিরোজপুর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক দেবাশীষ রায় গতকাল শুক্রবার দুপুরে ভাণ্ডারিয়া বাজারের অভিযান চালিয়ে এ জরিমানা আদায় করেন।

জামালপুর শহরের দুজন ব্যবসায়ীর গুদাম ও ঘর থেকে চার হাজার ৩৩০ লিটার সয়াবিন  তেল জব্দ করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এ সময় তাদের কাছ থেকে ২৭ হাজার টাকা জরিমানা আদায় এবং কিছু তেল বাজারমূল্যে বিক্রি করা হয়। অধিদপ্তরটির জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আরিফুল ইসলাম গত বৃহস্পতিবার দুপুরে এ অভিযান পরিচালনা করেন। জামালপুর শহরের দয়াময়ী মোড়ে ব্যবসায়ী রঞ্জন কুমার সিংহের গুদামে অভিযান চালিয়ে ঈদের আগের বাজার দরে কেনা ১৯টি ড্রাম ভর্তি তিন হাজার ৮৭৬ লিটার সয়াবিন তেল মজুদ পাওয়া যায়। এসব তেল জব্দ করা হয়। ব্যবসায়ী রঞ্জন কুমার সিংহ দাবি করেন, ঈদের আগে এসব তেল অবিক্রিত রয়ে গেছে। পরে জব্দকৃত সমুদয় সয়াবিন তেল আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাজার দরে বিক্রি করে অধিদপ্তরকে জানানোর নির্দেশ দেন দেয়া হয়।

পরে শহরের পূর্ব মুকুন্দবাড়ি এলাকার ব্যবসায়ী কামাল হোসেনের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তার বসতঘরের বিভিন্ন স্থানে লুকিয়ে রাখা ২৩টি কার্টনে ৪৫৪ লিটার সয়াবিন তেল জব্দ করে তাত্ক্ষণিক সরকার নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি করা হয়। অবৈধভাবে সয়াবিন তেল মজুদ করার অভিযোগে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনের ৪০ ধারায় ব্যবসায়ী কামাল হোসেনকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। একই এলাকার ব্যবসায়ী আলাউদ্দিনের দোকানে অভিযান চালিয়ে সয়াবিন তেলের বোতলের গায়ে প্রতি লিটার ১৬০ টাকার স্থলে ১৯০ টাকা লিখে বিক্রির প্রমাণ পায় অধিদপ্তর। এই অভিযোগে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনের ৩৮ ধারায় ব্যবসায়ী আলাউদ্দিনকে দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আরিফুল ইসলাম জানান, এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলায় এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে মজুদ তিন হাজার লিটার সয়াবিন তেল উদ্ধার করে ন্যায্য মূল্যে বিক্রি করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। গতকাল শুক্রবার দুপুরে উপজেলার বিজয়পুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে পাঁচ লিটারের বোতলে ভরা এই তেল জব্দ করা হয় বলে জানান অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. আছাদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ভোজ্যতেল মজুদকারী ওই ব্যবসায়ী বিজয়পুর বাজারের কামরুল হাসান স্টোর্সের মালিক কামরুল হাসান। তিনি ৭৬০ টাকা দরে কেনা পাঁচ লিটারের প্রতি বোতল বর্তমান মূল্য ৯৮৫ টাকায় বিক্রির জন্য বাড়িতে মজুদ করেছিলেন। অবৈধ মজুদের দায়ে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা করেছে অধিদপ্তর। এছাড়া বোতলের গায়ে লেখা আগের দাম মুছে বিক্রির অভিযোগে একই এলাকার ভাই বন্ধু স্টোরকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় বলে জানান অধিদপ্তরের আরেক সহকারী পরিচালক মো. আছাদুল ইসলাম। অন্যায় মজুদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।