• ঢাকা
  • শুক্রবার:২০২৪:এপ্রিল || ০৮:০৮:৩৫
প্রকাশের সময় :
মে ২০, ২০২২,
৯:৫৮ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট :
মে ২০, ২০২২,
৯:৫৮ অপরাহ্ন

২৫৮ বার দেখা হয়েছে ।

১৩ বছরে দেশে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি : চরমোনাই পীর

১৩ বছরে দেশে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি : চরমোনাই পীর

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেছেন, স্বাধীনতার পরে যারাই ক্ষমতায় এসেছে, তারাই জনগণের স্বপ্নকে গলা টিপে হত্যা করেছে, জনগণের সাথে প্রতারণা করেছে। দেশ শাসনের নামে জনগণকে জিম্মি করে মৌলিক অধিকার হরণের মাধ্যমে দেশের সম্পদ লুট করেছে। গণতন্ত্রের নামে সর্বত্র স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে। গুম-খুনের রাজত্ব কায়েম করেছে। দুর্নীতি, লুটপাট এবং সুদ-ঘুষকে রাষ্ট্রীয় নীতি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে।

শাসক শ্রেণির এমন কর্মকাণ্ডের ফলে স্বাধীনতা আজ অর্থহীন হয়ে পড়েছে। দুমুঠো খাবারের জন্য ট্রাকের পেছনে মানুষকে দৌড়াতে হচ্ছে। দেশ আর এভাবে চলতে পারে না।

শুক্রবার (২০ মে) জুমার নামাজের পর বরিশাল বঙ্গবন্ধু উদ্যানে অনুষ্ঠিত বিভাগীয় সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, স্বাধীনতার ৫১ বছরে এসেও বর্তমান সরকার ৭১ পূর্ববর্তী সরকারের মতো নিপীড়নমূলক আচরণ করছে। সাধারণ মানুষের কোনো অধিকার-সম্মান নেই। সব ভোগ করছে ক্ষমতাসীন এবং তাদের দোসররা। দেশের মানুষ আজ আতঙ্কিত, ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত। দেশময় সংঘাত-সহিংসতার অশনি সংকেত পাওয়া যাচ্ছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নবম জাতীয় সংসদে একতরফাভাবে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী করার পর থেকেই রাজনৈতিক সংকটে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে।

আমরা বারবার রাজনৈতিক সংকট উত্তরণে দাবি জানিয়ে আসছি। দেশের প্রায় সব রাজনৈতিকদল এবং নাগরিকসমাজের প্রতিনিধিগণ সংকট সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণের কথা বললেও, কার্যকর কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। আওয়ামী লীগ সরকার দেশের নির্বাচন ব্যবস্থাকেই ধ্বংস করে ফেলেছে। বিগত ১৩ বছরে দেশে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি। রাতের ভোটে নির্বাচিত বর্তমান সংসদের কোনো নৈতিক বৈধতা নেই। এই অবৈধ সংসদ বহাল রেখে কোনো নির্বাচন দেশবাসী মেনে নেবে না।

চরমোনাই পীর বলেন, ইসলাম নিয়ে মানুষের মধ্যে এখনো কিছু ভুল ধারণা আছে। অনেকের ধারণা, রাষ্ট্রীয়ভাবে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হলে সবকিছু ওলট-পালট হয়ে যাবে, অন্য ধর্মের মানুষ তাদের অধিকার হারাবে। নারীরা গৃহবন্দী হবে। মানুষের জীবনযাত্রা কঠিন হয়ে যাবে। এসব ভুল ধারণা। রাষ্ট্রে ইসলাম বিজয়ী হলে, মানুষের প্রয়োজনে রাষ্ট্রে যেসব প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে সব বহাল থাকবে।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের উত্থাপিত ১৫ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পূর্বে জাতীয় সংসদ ভেঙে দেওয়া, নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মতামত নিয়ে নির্বাচনকালীন জাতীয় সরকার গঠন, তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচিত সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পূর্ব পর্যন্ত সশস্ত্রবাহিনী মোতায়েন এবং নির্বাচনের দিন সশস্ত্রবাহিনীর হাতে বিচারিক ক্ষমতা প্রদান, নির্বাচনে সব দলের সমান সুযোগ তৈরি করা, রেডিও, টিভিসহ সব সরকারি-বেসরকারি গণমাধ্যমে সমান সুযোগ প্রদান এবং রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে হয়রানি বন্ধ করা, ইভিএম পদ্ধতির ব্যবহার বন্ধ করা।

দুর্নীতিবাজদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ করে বাজার কারসাজির সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা, দেশে মদ ও মাদকদ্রব্য নিষিদ্ধ করা, শিক্ষার সব স্তরে ধর্মীয় শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করা, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মুসলিম শিশুদের জন্য নামাজ ও কোরআন শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করা, সিলেবাস থেকে ডারউইনের থিউরি বাদ দেওয়া, কারাবন্দী সব মজলুম আলেম এবং রাজবন্দীদের মুক্তি দেওয়া, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, জাতীয় সংহতি ও কার্যকর সংসদ প্রতিষ্ঠায় জাতীয় নির্বাচনে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির নির্বাচন ব্যবস্থা প্রবর্তন করা, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করা এবং সব রাজনৈতিক কর্মসূচি ও বাকস্বাধীনতা উন্মুক্ত করা।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন দলের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম। বক্তব্য দেন মহাসচিব হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, কেন্দ্রীয় দাওয়াহ বিষয়ক উপদেষ্টা প্রিন্সিপাল মাওলানা ওবায়দুর রহমান মাহবুব, যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক বেলায়েত হোসেন, কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক মাওলানা লোকমান হোসাইন জাফরী প্রমূখ।